টানা তিন দিনের ছুটিতে পাহাড়প্রেমী প্রিয়দের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে পর্যটন নগরী বান্দরবান। জেলার মেঘলা, নীলাচল, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, নীলগিরি, তমাতুঙ্গীসহ সবগুলো দর্শনীয় স্থানে এখন পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘ দিন পর্যটক না আসলেও টানা ছুটিতে এতদিন পর আশানুরূপ পর্যটকের আগমন ঘটায় খুশি হোটেল মোটেল রিসোর্টের মালিকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রতিবছর শীত মৌসুমে পাহাড়ের সৌন্দর্য্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন শত শত পর্যটক। তবে নিষেধাজ্ঞার কারনে এবছর শীত মৌসুমে তেমন একটা পর্যটকের আগমন না ঘটলেও সাপ্তাহিক ছুটি ও বড়দিন উপলক্ষে টানা ৩ দিনের ছুটি থাকায় প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটেছে বান্দরবানে।
সরেজমিনে দেখাগেছে, যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততা ভুলে কোলাহল মুক্ত পরিবেশে পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে পর্যটকরা চাঁদের গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে। জেলার মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিকলেক, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, নীলগিরি, নীলদিগন্ত ও তমাতুঙ্গীসহ সবগুলো দর্শনীয় স্থান এখন ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠেছে। কেউ বা ছুটে যাচ্ছে ঝর্ণার সৌন্দর্য্য দেখতে, কেউবা ছুটে যাচ্ছে সুউচ্চ পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে।
এদিকে, অবকাশ যাপনে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিপাসুরা। চট্টগ্রাম থেকে আগত পর্যটক আবু রায়হান বলেন, সরকারি ছুটি পেয়ে তিনি অফিস কলিগদের সঙ্গে বান্দরবান এসেছেন। খুবই সুন্দর পরিবেশ।
আরেক পর্যটক সালাউদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘আমি অনেক দেশ বেড়িয়েছি। কিন্তু আমাদের দেশেও যে এত সুন্দর মনোরম দৃশ্য রয়েছে তা এখানে না আসলে জানতেও পারতাম না। আসলেই মন কেড়ে নেয় এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ।’
চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। নিজেকে সবুজ প্রকৃতির মাঝে বিলিয়ে দিতে চান ঢাকা থেকে আসা নারী পর্যটক নাদিরা জামান। তিনি বলেন,‘ বান্দরবান এত সুন্দর ভাবতেই পারছিনা। এ যেন এক রঙ্গিন স্বপ্ন।’
নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা আদীব বড়ুয়া জানান, দীর্ঘদিন পর বান্দরবানে প্রচুর সংখ্যক পর্যটকদের আগমন ঘটেছে। শুক্রবারই প্রায় আড়াই হাজারের বেশি পর্যটকের আগমন ঘটেছে নীলাচল পর্যটন স্পটে। শনিবার বিকালে পর্যটকের সংখ্যা আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি।
এদিকে দীর্ঘদিন পর টানা ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক আশায় খুশি হোটেল মোটেল রিসোর্ট মালিকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে হোটেল গার্ডেন সিটির মালিক মো. জাফর জানান, দীর্ঘদিন পর তিন দিনের টানা ছুটিতে বান্দরবানে প্রচুর পর্যটকদের আগমন ঘটছে। আশা করছি সামনের দিনগুলোতেও এভাবে পর্যটকরা আসবেন।
তবে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ ও আনন্দদায়ক করতে সবধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সকল ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলায় পর্যটকদের সেবায় রয়েছে শতাধিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট গেস্ট হাউস। এছাড়াও পর্যটক পরিবহনে রয়েছে ৪ শতাধিক চাঁদের গাড়ী। সব মিলিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জেলার ২০ হাজার মানুষ পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত।
আপনার মতামত লিখুন :